নানারকম শর্ত আরোপ করে জনগণের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় বাধা সৃষ্টি হলে গণতন্ত্র উত্তরণের পথ সংকটে পড়বে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেছেন, সংবিধান ও লিখিত বিধি-বিধান দিয়ে কখনোই ফ্যাসিবাদ ঠেকানো যায় না। রাষ্ট্র ও রাজনীতিতে ফ্যাসিবাদ ঠেকাতে হলে অবশ্যই জনগণকে রাজনৈতিকভাবে শক্তিশালী করার কোনো বিকল্প নেই। সরাসরি ভোট দিয়ে জনপ্রতিনিধি নির্বাচনের যে চর্চার মাধ্যমেই জনগণ শক্তিশালী হয়ে উঠবে। নির্বাচনই হচ্ছে এর অন্যতম প্রধান মাধ্যম।
মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) রাজধানীর বাংলাদেশ চীন মৈত্রী আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের ৪৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনায় সভায় ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
তারেক রহমান বলেছেন, গণতন্ত্রকামী রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে দূরত্ব তৈরি হলে রাষ্ট্র এবং রাজনীতিতে পতিত, পরাজিত, পলাতক ফ্যাসিস্ট চক্রের পুনর্বাসনের পথ সহজ হয়ে উঠবে। একাত্তর ছিল স্বাধীনতা অর্জনের যুদ্ধ, চব্বিশ স্বাধীনতা রক্ষার যুদ্ধ। হাজারো শহীদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে ইতিহাসের নৃশংসতম এক ফ্যাসিস্টের পদত্যাগ এবং পলায়নের পর এখন ফ্যাসিবাদবিরোধী গণতান্ত্রিক শক্তি নিজেদের মধ্যে নিত্যনতুন ইস্যু নিয়ে অহেতুক বিতর্কে লিপ্ত হওয়া শহীদদের আত্মত্যাগের অবমাননার শামিল। গণতান্ত্রিক ইনসাফভিত্তিক দেশ গড়ার মাধ্যমেই শহীদদের রক্তের ঋণ শোধ করা এখন সময়ের দাবি।

কথার রাজনীতি বাদ দিয়ে কাজের রাজনীতিতে মনযোগী হওয়ার প্রতি জোর দিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেছেন, বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের সামনে একটি নিরাপদ ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে চাইলে অবশ্যই আমাদেরকে প্রচলিত ধারার রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। প্রতিশোধ-প্রতিহিংসা কিংবা কথা বলার রাজনীতির পরিবর্তে বাস্তবধর্মী পরিকল্পনা গ্রহণ এবং বাস্তবায়নের মাধ্যমে প্রচলিত রাজনীতির ধারার গুণগত পরিবর্তন ঘটাতে হবে। বিএনপির আগামী দিনের রাজনীতি হবে জনগণের জীবনমান উন্নয়নের রাজনীতি। সেটি দেশের ভেতরে হোক, বিদেশে হোক। যাতে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা যায়। আমাদের আরেকটি লক্ষ্য নিরাপদ কর্মপরিবেশ সৃষ্টি করা।
তারেক রহমান বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে জাতীয় নির্বাচনের সম্ভাব্য সময় নির্ধারণ করেছেন। এ নির্বাচনের মাধ্যমে দেশের জনগণ দেড় দশকের বেশি সময় পর নিজেদের এজেন্ডা-ম্যানিফেস্টো বাস্তবায়নের সুযোগ পাবেন। আগামীতে বিএনপির রাজনীতি হবে জনগণের জীবনমান উন্নয়নের রাজনীতি উল্লেখ করে দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, সেটি দেশের ভেতরে হোক, বিদেশে হোক। যাতে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা যায়। আমাদের আরেকটি লক্ষ্য নিরাপদ কর্মপরিবেশ সৃষ্টি করা।
জনগণেরের রায়ে নির্বাচিত হলে, আগামী পাঁচ বছরে সারাদেশে কমপক্ষে আমরা ২৫ কোটি গাছ লাগানোর পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন তারেক রহমান। তিনি বলেন, দেশকে বন্যা-খরা থেকে রক্ষার পাশাপাশি কৃষকদের সেচ সুবিধার জন্য, মানুষের পানির সুবিধা নিশ্চিত করার জন্য আমরা ইনশল্লাহ পুনরায় খাল খনন কর্মসূচি চালু করব সিদ্ধান্ত নিয়েছি। বর্তমানে সমগ্র বিশ্ব আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের যুগে প্রবেশ করেছে। সময়ের এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় কিন্তু আমাদের পিছিয়ে থাকার কোনরকম সুযোগ নেই। এই সময়ের চাহিদার দিকে লক্ষ্য রেখে বিএনপি ইতিমধ্যেই বিভিন্ন সেক্টরকে চিহ্নিত করে সুনির্দিষ্ট এবং সুচিন্তিত পরিকল্পনা বা পলিসি নির্ধারণ করেছে।
তিনি আরো বলেন, আমরা বলেছি, বিএনপির আগামী দিনের নীতি বা রাজনীতি হবে জনগণের জীবনমান উন্নয়নের রাজনীতি। সেটি দেশের ভিতরে হোক, বিদেশে হোক। যাতে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা যায়। শুধু কর্মসংস্থান সৃষ্টি নয়, আমাদের আরেকটি মূল লক্ষ্য বা টার্গেট থাকবে নিরাপদ কর্ম পরিবেশ সৃষ্টি করা।
এ সময় তিনি বিএনপির বিভিন্ন উন্নয়ন পরিকল্পনা সম্বন্ধে বিস্তারিত আলোচনা করেন।
স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহসান। এ ছাড়াও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান, নজরুল ইসলাম খান, মেজর হাফিজ উদ্দিন আহমেদ (অব.), যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু প্রমুখ।
শেয়ার করুন :










