শ্রম দিবসের ছুটির শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে হাজারো মানুষ বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন। তাঁদের দাবি, শ্রমিক সুরক্ষা জোরদার করতে হবে। একই সঙ্গে দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নানা নীতির সমালোচনাও করেন তাঁরা।গতকাল সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের ৫০টি অঙ্গরাজ্যে এক হাজারেরও বেশি বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ সময় বিক্ষোভকারীরা ‘ধনকুবেরের চেয়ে শ্রমিক গুরুত্বপূর্ণ’ ব্যানার নিয়ে দাঁড়ান। বিক্ষোভকারীদের দাবি, শ্রমিকদের সুরক্ষা জোরদার করতে হবে, স্কুলগুলোকে পুরোপুরি অর্থায়ন করতে হবে, সবার জন্য স্বাস্থ্যসেবা ও বাসস্থানের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। এ ছাড়া তাঁরা করপোরেট দুর্নীতি, প্রান্তিক সম্প্রদায়ের ওপর আক্রমণ এবং ট্রাম্প প্রশাসনের আমলে কেন্দ্রীয় (ফেডারেল) সরকারের অতিমাত্রায় হস্তক্ষেপ বন্ধ করারও দাবি জানাচ্ছেন। নিউইয়র্কে ট্রাম্প টাওয়ারের সামনে শত শত মানুষ জড়ো হন। তাঁরা ট্রাম্পের পদত্যাগের দাবিতে স্লোগান দেন এবং প্রেসিডেন্টকে ‘ফ্যাসিবাদী’ আখ্যা দেন। একদল বাদক বাদ্যযন্ত্র বাজাচ্ছিলেন। এ সময় শ্রমিকেরা জীবনধারণের জন্য পর্যাপ্ত মজুরি ও সবার জন্য স্বাস্থ্যসেবার দাবিসংবলিত প্ল্যাকার্ড তুলে ধরেন।

ন্যূনতম মজুরির চেয়ে কম পারিশ্রমিক
রেস্তোরাঁর কর্মীদের অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন ‘ওয়ান ফেয়ার ওয়েজ’-এর সদস্য জিওভান্নি উরিবে আল–জাজিরাকে বলেন, শ্রমিকদের অধিকার খর্ব করা ধনকুবেরদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে তিনি বিক্ষোভে যোগ দিয়েছেন।
উরিবে বলেন, ‘নিউইয়র্ক নগরের পরিষেবা খাতের কর্মীরাই এই শহরের মেরুদণ্ড। ন্যাশনাল রেস্টুরেন্ট অ্যাসোসিয়েশন আমাদের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী। তাঁরা কর্মীদের ন্যূনতম মজুরি না দিয়ে ন্যূনতমের কম পারিশ্রমিক চালু রাখতে চাইছে। আমরা শুধু বেঁচে থাকার জন্য যেটুকু দরকার, সেটুকু মজুরি চাই।’
যুক্তরাষ্ট্রে কেন্দ্রীয় সরকারের নির্ধারিত ন্যূনতম মজুরি ঘণ্টায় ৭ দধমিক ২৫ ডলার। ২০০৯ সালের পর থেকে এই মজুরি আর বৃদ্ধি করা হয়নি। এর একটি কারণ হলো শিল্পগোষ্ঠীর সফল লবিং। ওয়েটার বা টিপ-নির্ভর (বকশিশ) সেবাকর্মীদের জন্য নির্ধারিত ‘ন্যূনতমেরও নিচের’ মজুরি মাত্র ২ দশমিক ১৩ ডলার। সর্বশেষ ১৯৯১ সালে এ মজুরি নির্ধারণ করা হয়েছিল।
আইন অনুযায়ী, এই পারিশ্রমিক বাড়িয়ে ন্যূনতম ৭ দশমিক ২৫ ডলার করতে দিতে হবে। তবে অধিকারকর্মীরা বলছেন, প্রায়ই এভাবে শ্রমিকদের মজুরি থেকে বঞ্চিত করা হয়।
শিকাগোতে বিক্ষোভকারীদের নিশানা ন্যাশনাল গার্ড
শিকাগো শহরের কেন্দ্রে হাজারো মানুষ ট্রাম্পের দেওয়া প্রতিশ্রুতির বিরুদ্ধে বিক্ষোভে নামেন। তিনি লস অ্যাঞ্জেলেস ও ওয়াশিংটন ডিসির মতো শিকাগোতেও ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েনের হুমকি দিয়েছেন। উল্লিখিত এ দুটি শহরও শিকাগোর মতো ডেমোক্র্যাটশাসিত।
বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে মেয়র ব্র্যান্ডন জনসন ঘোষণা দেন, কেন্দ্রীয় সরকারের অনধিকার চর্চার বিরুদ্ধে শিকাগো প্রতিরোধ গড়ে তুলবে।
এ সময় বিক্ষোভকারীরা শিকাগোর নীল ডোরা কাটা পতাকা ওড়াচ্ছিলেন। তাঁদের কাছ থেকে জোরালো করতালি পেয়ে মেয়র বলেন, ‘এই শহরটিই দেশকে রক্ষা করবে।’
শেয়ার করুন :










