২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মামলায় (বিস্ফোরক ও হত্যা মামলা) বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ আসামিদের খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা আপিলের ওপর শুনানি শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার শুনানি নিয়ে পরবর্তী শুনানির জন্য ২৪ জুলাই দিন রেখেছেন আপিল বিভাগ। শুনানি নিয়ে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন ছয় সদস্যের আপিল বিভাগ ওই সময় পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করেন।
পেপারবুক থেকে উপস্থাপনের মধ্য দিয়ে বৃহস্পতিবার এ আপিলের ওপর শুনানি শুরু করে রাষ্ট্রপক্ষ। শুনানি শুরুর আগে পলাতক মাওলানা তাজউদ্দিন ও মো. হানিফের (হানিফ পরিবহনের মালিক) পক্ষে স্টেট ডিফেন্স হিসেবে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম শাহজাহানকে নিয়োগ দেওয়া হয়। দুই দশক আগে আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলার ঘটনায় করা পৃথক মামলায় (হত্যা ও বিস্ফোরক মামলা) বিচারিক আদালতের দেওয়া সাজার রায় বাতিল করে গত বছরের ১ ডিসেম্বর রায় দেন হাইকোর্ট। ফলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ গ্রেনেড হামলা মামলার আসামিরা খালাস পান। পৃথক দুটি মামলার (হত্যা ও বিস্ফোরক মামলা) হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর রাষ্ট্রপক্ষ পৃথক লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করে। শুনানি নিয়ে গত ১ জুন লিভ টু আপিল মঞ্জুর করেন আপিল বিভাগ। এর ধারাবাহিকতায় পৃথক আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। এ আপিলের ওপর শুনানি শুরু হলো।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আবদুল্যাহ আল মাহমুদ, সঙ্গে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জহিরুল ইসলাম সুমন ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আবু সাদাত মো. সায়েম ভূঞা। আসামিপক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম শাহজাহান ও এম বদরুদ্দোজা বাদল, আইনজীবী কায়সার কামাল ও মোহাম্মদ শিশির মনির প্রমুখ।
পরে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম শাহজাহান প্রথম আলোকে বলেন, বিচারিক আদালতের রায়ে তাজউদ্দিন ও মোহাম্মদ হানিফের মৃত্যুদণ্ড ছিল। হাইকোর্টের রায়ে তাদের খালাস হিসেবে ধরে নেওয়া যায়, কেননা অভিযুক্ত যাঁরা আপিল করেননি, তাঁরাও রায়ের সুবিধা পাবেন বলে উল্লেখ করা হয়। যেহেতু হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে লিভ মঞ্জুরের পর আপিল হয়েছে। কাজেই আইনগতভাবে তাঁরা রাষ্ট্রপক্ষ বা কোর্ট থেকে আইনজীবী (স্টেড ডিফেন্স) পাওয়ার যোগ্য। তাঁরা পলাতক। এ দুজনের পক্ষে স্টেট ডিফেন্স হিসেবে তাঁকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
শুনানির বিষয়ে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম শাহজাহান বলেন, ‘রাষ্ট্রপক্ষ পেপারবুক থেকে পড়া শুরু করেছে। সাক্ষীগুলো পড়েছেন। হাইকোর্টের রায় উপস্থাপিত করেছে। মুফতি হান্নান ছাড়া অন্যদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেখবেন আদালত। পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী বৃহস্পতিবার তারিখ ধার্য করা হয়েছে।’
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার সমাবেশে গ্রেনেড হামলা হয়। এতে ২৪ জন নিহত হন। আহত হন দলটির শতাধিক নেতা-কর্মী।
শেয়ার করুন :